Monday, February 3, 2025

ভয়ংকর যুদ্ধ বিমান দিয়ে সিরিয়ায় ঘাঁটি সাজাচ্ছে তুরস্ক

 

তুরস্কের এফ-১৬। ছবি : সংগৃহীত

সিরিয়ায় বাশার আল আসাদের সরকারের বিরুদ্ধে অভিযান পরিচালনাকারী বিদ্রোহী গোষ্ঠী হায়াত তাহরির আল শামের (এইচটিএস) নেতা আহমেদ আল শারা দেশটির ক্ষমতায় আসার পর থেকেই পশ্চিমা ও আরব বিশ্বের নেতাদের সমর্থন আদায়ের চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছেন। এর মধ্যে তার শাসনকে কেন্দ্র করে এবার নতুন পরিকল্পনা নিয়েছে তুরস্ক।

নতুন সিরিয়াকে পুনর্গঠনের অংশ হিসেবে সামরিক শক্তি বাড়াতে বড় পদক্ষেপ নিতে যাচ্ছে আঙ্কারা। নতুন সামরিক ঘাঁটি স্থাপনের পাশাপাশি অত্যাধুনিক মার্কিন এফ-১৬ যুদ্ধবিমান মোতায়েনের সিদ্ধান্ত নিয়েছে দেশটি। সোমবার (০৩ ফেব্রুয়ারি) ইরানের রাষ্ট্রীয় সংবাদমাধ্যম মেহের নিউজের এক প্রতিবেদন থেকে এ তথ্য জানা যায়।

>

সামরিক শক্তি বৃদ্ধির পরিকল্পনা

প্রতিবেদনে উল্লেখ করা হয়, তুরস্ক সিরিয়ায় অন্তত দুটি সামরিক ঘাঁটি নির্মাণের পরিকল্পনা করছে। দেশটির অভ্যন্তরীণ সূত্রের বরাত দিয়ে তুর্কিয়ে সংবাদমাধ্যম জানায়, অদূর ভবিষ্যতে সিরিয়ায় যুদ্ধবিমান মোতায়েনেরও পরিকল্পনা রয়েছে তুরস্কের প্রেসিডেন্ট রিসেপ তাইয়েপ এরদোয়ানের সরকারের।

প্রতিবেদনে আরও বলা হয়, তুরস্ক-সিরিয়া শিগগিরই একটি যৌথ প্রতিরক্ষা চুক্তিতে স্বাক্ষর করতে যাচ্ছে। এই চুক্তির আওতায় সিরিয়ায় যে কোনো তাৎক্ষণিক সামরিক হুমকি মোকাবিলায় আঙ্কারা দামেস্ককে সহায়তা দেবে। পাশাপাশি, তুর্কি বাহিনী সিরীয় সেনাদের সামরিক প্রশিক্ষণও দেবে।

৫০টি এফ-১৬ যুদ্ধবিমান মোতায়েনের পরিকল্পনা

তুরস্ক মোট ৫০টি এফ-১৬ যুদ্ধবিমান সিরিয়ায় মোতায়েনের পরিকল্পনা করেছে। মার্কিন নির্মাতা লকহিড মার্টিনের তথ্য অনুযায়ী, যুক্তরাষ্ট্রের পর সর্বোচ্চ সংখ্যক এফ-১৬ যুদ্ধবিমান রয়েছে তুরস্কের হাতে। বিশ্বজুড়ে মাত্র ৫টি দেশ রয়েছে যারা স্থানীয়ভাবে মার্কিন প্রযুক্তি ব্যবহার করে এই যুদ্ধবিমান তৈরি করে, তুরস্ক তার অন্যতম।

বিভিন্ন প্রতিবেদনের তথ্য অনুসারে, তুরস্কের কাছে বর্তমানে ২৩০ থেকে ২৭০টি এফ-১৬ যুদ্ধবিমান রয়েছে। অন্যদিকে, সিরিয়ার বাফার জোনের কাছে একটি নতুন সামরিক ঘাঁটি তৈরি করছে ইসরায়েল। এর আগে সিরিয়ায় বেশ কয়েকটি সামরিক ঘাঁটি স্থাপন করেছিল যুক্তরাষ্ট্র।

শক্তিশালী সরকার গঠনের পথে আল শারা

সম্প্রতি সিরিয়ার অন্তর্বর্তী সরকারের প্রেসিডেন্ট হিসেবে শপথ নিয়েছেন এইচটিএস নেতা আহমেদ আল শারা। মঙ্গলবার (০৪ ফেব্রুয়ারি) তিনি তুরস্কের প্রেসিডেন্ট এরদোয়ানের আমন্ত্রণে আঙ্কারা সফরে যাচ্ছেন।

তুরস্কের প্রেসিডেন্ট কার্যালয়ের যোগাযোগ বিভাগের প্রধান ফাওরেত্তিন আলতুন এক্সে দেওয়া বার্তায় জানিয়েছেন, এই সফর সিরিয়ার রাজনৈতিক স্থিতিশীলতার জন্য অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ।

এর আগে এক টেলিভিশন ভাষণে আল শারা বলেন, ‘সিরিয়ায় শান্তি প্রতিষ্ঠাই এখন সবচেয়ে বড় লক্ষ্য। পাশাপাশি শান্তিপূর্ণ নির্বাচন নিশ্চিত করাও জরুরি। একতাবদ্ধভাবে কাজ করলেই কেবল আমরা সুষ্ঠু নির্বাচনের পথে যেতে পারব।’

মধ্যপ্রাচ্যের কূটনৈতিক আলোচনায় নতুন গতি

ক্ষমতা গ্রহণের পর প্রথমবার রাষ্ট্রীয় সফরে সৌদি আরব গেছেন আহমেদ আল শারা। রোববার (০২ ফেব্রুয়ারি) সৌদির রাজধানী রিয়াদে যুবরাজ মোহাম্মদ বিন সালমানের সঙ্গে বৈঠক করেছেন তিনি। বিশ্লেষকরা মনে করছেন, এই বৈঠক সৌদি-সিরিয়া সম্পর্কের ক্ষেত্রে নতুন দিগন্ত উন্মোচন করবে এবং সিরিয়ার পুনর্গঠনে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখবে।

গত সপ্তাহে অন্তর্বর্তী প্রেসিডেন্ট হিসেবে দায়িত্ব নেওয়ার পর আল শারা উপসাগরীয় অঞ্চলের গুরুত্বপূর্ণ নেতা হিসেবে সৌদি যুবরাজের সঙ্গে সাক্ষাৎ করলেন। এর আগে গত বৃহস্পতিবার কাতারের আমির শেখ তামিম বিন হামাদ আল থানি দামেস্কে আল শারার সঙ্গে বৈঠক করেছিলেন।

উল্লেখ্য, ডিসেম্বরে সিরিয়ার আসাদ সরকারকে উৎখাত করে ক্ষমতায় আসে বিদ্রোহী গোষ্ঠী হায়াত তাহরির আল শাম (এইচটিএস)। বিদ্রোহী গোষ্ঠীটি গত বুধবার সিরিয়ার অন্তর্বর্তী প্রেসিডেন্ট হিসেবে আহমেদ আল শারার নাম ঘোষণা করে। নতুন নেতৃত্বের হাত ধরে সিরিয়া এখন এক নতুন অধ্যায়ের সামনে দাঁড়িয়ে আছে।

No comments:

Post a Comment

*Found in Your Junk Drawer: These 6 Coins from the 1970s Could Make You Rich.*

  A nostalgic dive into everyday coins with shocking hidden value. Let’s face it — we all have that one drawer. Half rubber bands, dead ...